?দিঘলিয়া ওয়েব ব্লগ ট্যালেন্ট ডেস্ক?
শহিদুুল ইসলাম সুজন, মানিকগঞ্জ থেকেঃ
রিকশাচালক বাবার ভ্যানচালক ছেলে মানিকগঞ্জ জেলার তরুণ চিকিত্সক ডা. আল মামুন। মানিকগঞ্জের পশ্চিম হাসলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাতেখড়ি হয় আল মামুনের। এরপর মানিকগঞ্জ সদরের লেমুবাড়ী বিনোদা সুন্দরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন এ প্লাস নিয়ে এসএসসি পাশ করেন। এমন রেজাল্টে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় তার। দরিদ্র কোটায় বিনা খরচে এইচএসসি সম্পন্ন করেন ঢাকার ক্যামব্রিয়ান কলেজ থেকে। এরপর ভর্তির সুযোগ পান ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের ২০তম ব্যাচে। সেখান থেকেই আজ তিনি সরকারিভাবে ৩৯তম বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে গেজেটেড হলেন।
চিকিত্সক হওয়ার স্বপ্ন ছোটোবেলা থেকেই ছিল কি না প্রশ্নে ডা. আল মামুন বলেন, ঠিক তা নয়, সে সময় চিকিত্সক হব এমনটা কল্পনা করিনি। চড়াই-উতরাই করে স্বপ্ন পরিবর্তন হতে থাকে আমার। সেই যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি, তখন চাইতাম স্কুলের প্রধান শিক্ষক হব। যখন হাই স্কুলে গেলাম তখন চেয়েছি হাই স্কুলের শিক্ষক হব। এভাবেই জীবন এগিয়েছে। নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না।
তার সফলতার পেছনে শুধু নিজের সংগ্রাম ও অদম্য ইচ্ছাই মূল কারণ নয় বললেন ডা. আল মামুন। নানা বিপদে স্থানীয়দের এবং কলেজের অবদানের কথাকে ভুলেননি তিনি।
গেজেটে নিজের নাম দেখে আবেগে আপ্লুত ডা. আল মামুন। তিনি বলেন, ছোটোবেলা থেকেই অনেক প্রতিকূলতার মাঝে, দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে লেখাপড়া চালিয়ে এসেছি। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে আমি বড়ো। যেখানে আমার গ্রামে ডাক্তার বলতে ওষুধের দোকানদারকেই বুঝে, সেই গ্রাম থেকে আমি আজ সরকারিভাবে ৩৯তম বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে গেজেটেড হলাম।
তিনি বলেন, মনে পড়ে এসএসসি পরীক্ষার সময় বোর্ডের ফি দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না আমার। সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু টাকা জোগাড় করতে পারছিলাম না। এ সময় আমাদের উপজেলার চেয়ারম্যান আমাকে ফিসের টাকা দেন। আমি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলাম। গোল্ডেন এ+ পেলাম। শিক্ষকরা এমন রেজাল্টে খুব খুশি হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। শ্রদ্ধেয় স্যাররা ফ্রি প্রাইভেট পড়িয়েছেন আমাকে। এসএসসি পরীক্ষার পর ভ্যানে সবজি বিক্রি করে সংসারের খরচ জোগাড় করছিলাম। ফলাফলের দিন শুনলাম গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি। আর আমার স্কুল হতে আমার ব্যাচই প্রথম এ+ পেল। স্যাররাও খুব খুশি। কিন্তু তখন সবজি বিক্রিতেই মনোযোগী। এইচএসসি পড়তে পারব কি না, কোথায় ভর্তি হব, কী করব? কিছুই জানি না। এর মাঝে একদিন হঠাত্ গ্রাম সম্পর্কিত এক দাদুর কাছে শুনতে পেলাম ঢাকার ক্যামব্রিয়ান কলেজে গরিব মেধাবীদের ফ্রি পড়াবে। দাদু আমাকে ঢাকা নিয়ে এলেন। সেটাই আমার প্রথম ঢাকায় আসা।
?ড.আল মামুন কে তার ট্যালেন্টেড চ্যালেঞ্জ কে দিঘলিয়া ওয়েব ব্লগ-এর পক্ষ থেকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন সম্পাদক ও প্রকাশক মোড়ল মোঃ ইলিয়াস হুসাইন?
Leave a Reply