।।১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে ৬৫ কি:মির চক্রাকার সড়ক প্রকল্প।।
☞লিখেছেনঃ সুজিৎ নন্দী
চক্রাকার সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৫ কিলোমিটার। ঢাকা সার্কুলার রুট, পার্ট ২ নামের প্রকল্পের আওতায় ৪৭ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশের কাজ করবে সওজ। বাকি অংশ (আবদুল্লাহপুর থেকে ধউর, চুনকুটিয়া থেকে পোস্তগোলা, শিমরাইল থেকে ডেমরা) পৃথক তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে সওজ ও সেতু কর্তৃপক্ষ।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঢাকা ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল বলেন, চক্রাকার সড়কটি বৈদেশিক অর্থায়নে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ব্যাংকটি এই প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে।
সওজের উদ্ধতন কর্মকর্তা বলেন, চক্রাকার সড়কের পিডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। সেখানে এটি যাচাই-বাছাই চলছে। বৈদেশিক অর্থায়ন না পাওয়া গেলে সরকারি অর্থায়নে তিন ধাপে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী অর্থবছরে প্রকল্পটি পাস হবে বলে তিনি আশা করছেন।
সওজ সূত্র জানায়, গত বছরের মে মাসে চক্রাকার সড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়। এরপর সড়কের জন্য প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) তৈরি করা হয়। প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নে আনুমানিক ১২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ব্যয় হবে জমি অধিগ্রহণ সংশ্লিষ্ট কাজে। জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ৬১ দশমিক ৮ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ইতিমধ্যেই জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু করেছে সওজ।
ঢাকা শহরের পশ্চিমাংশে চক্রাকার সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। ৫৫ দশমিক ৮ মিটার প্রস্থের ‘আধুনিক’ এই সড়কে দ্রুতগতির যান চলাচলের জন্য লেন থাকবে চারটি। দুই পাশে দুটি করে সার্ভিস লেন ছাড়াও মেট্রোরেলের জন্য ১০ মিটার করে জায়গা রাখা হবে। দুই পাশে পরিষেবা সংযোগের জন্য তৈরি করা হবে ‘টানেল’।
সড়কটি শুরু হবে আবদুল্লাহপুর থেকে। বিরুলিয়া, গাবতলী, চুনকুটিয়া, পোস্তগোলা, নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া ও শিমরাইল হয়ে ঢাকার ডেমরায় গিয়ে শেষ হবে এটি। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানান, ইতিমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। অর্থায়ন সাপেক্ষে আগামী অর্থবছর থেকে সড়কের কাজ শুরু হতে পারে।
আবদুল্লাহপুর থেকে বিরুলিয়া-গাবতলী হয়ে বাবুবাজার সেতু পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়ককে কেন্দ্র করে নির্মাণ করা হবে এই সড়ক। ঢাকা শহরকে বন্যামুক্ত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্মাণ করা বাঁধের ওপর সড়কটি করা হয়েছে। সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। এখন বেড়িবাঁধ সড়ক আধুনিক ও প্রশস্ত করে এর শুরু ও শেষে আরও অন্তত ৩০ কিলোমিটার যুক্ত করে চক্রাকার সড়ক নির্মাণের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নের পর চক্রাকার সড়কের প্রস্থ হবে ৫৫ দশমিক ৮ মিটার। এর মধ্যে উভয় পাশে দুই লেন করে চার লেনের হাইওয়ে এবং হাইওয়ের দুই পাশে দুটি করে মোট চারটি সার্ভিস লেন হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে যাতে সড়কটি ধরে মেট্রোরেল করা যায়, সে জন্য ১০ মিটার করে জায়গা রাখা হবে। আর বাস-বের জন্য সড়কের কিছু অংশে সাড়ে তিন মিটার করে জায়গা থাকবে।
Leave a Reply