গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় এক সভায় হুশিয়ারি দেন ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক। তিনি বলেছেন আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কোনও ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকোট সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে ভোক্তা আইনে কঠোর ব্যবস্হা নেয়া হবে। ব্যবসায়ীদের দাবি, অভিযানের নামে ব্যবসায়ী যেন হয়রানির শিকার না হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আরও বলছে, শুক্রবার (১১ মার্চ) থেকে রসিদ ছাড়া বিক্রি করা যাবে না তেল। মে মাস থেকে খোলা তেল বিক্রি বন্ধ।
নিত্যপণ্যের বাজার তদারকিতে প্রতিদিন রাজধানীর বাজারে অভিযান করছে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর।
গত রোববারও মৌলভীবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অধিদফতর।
সেখানকার ভোজ্যতেলের পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযানের পরিবর্তে আলোচনায় বসার আহবান জানান। তাদের সেই আহবানে সাড়া দিয়েছে ভোক্তা অধিকার অধিদফতর।
গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সকালে মূল্যবৃদ্ধি রোধে কারওয়ান বাজার কার্যালয়ে তেল ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠকে বসে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
এ সময় মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা মিলাদের দায়ী করে জানান, তারা সময়মতো তেল সরবরাহ না করায় বাজারে সংকট তৈরি হচ্ছে।
বৈঠকে তারা বলেছেন, সরবরাহ বন্ধ রেখে মূল কারসাজিতে জড়িত মিলাররা। দাম বাড়াতে ঘি ঢালছে কিছু অসাধু ডিলার।
সভায় উঠে আসে, সরবরাহ না করা, দাম বেশি নেয়া, পাকা রশিদ না দেয়াসহ নানা তথ্য। তাদের দাবি, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতে গঠন করতে হবে যৌথ মনিটরিং টিম।
সভায় এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, মিল বিগত একমাস কোনও সয়াবিন তেল বিক্রি করে নি। আগে যেগুলো সরবরাহ করেছিল, সেগুলো সরবরাহ করতেও সমস্যা হচ্ছে।
প্রতিনিধিরা দাবি করেন, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতে গঠন করতে হবে যৌথ মনিটরিং টিম। ভোক্তা অধিদফতরের লোক থাকবে, এফবিসিসিআই এর লোকও থাকবে।
সভায় ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তারাও অংশ নেন। তারা বলেন, কিছু মধ্যস্বত্তভোগী ব্যবসায়ীর কারণে সাপ্লাই অর্ডার হাত বদল হয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে।
দুই ঘণ্টার আলোচনায় ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘রমজানে কেউ তেল কিংবা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করে বাজার অস্থিতিশীল করলে, আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে।’
তিনি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত ভোজ্যতেল মজুদ থাকলেও কৃত্রিম সংকট বানিয়ে দাম বাড়ানোয় জড়িতদের কোনও ছাড় দেয়া হবে না।
বর্তমানে যে পরিমাণ মজুদ রয়েছে, তাতে রমজান মাস পর্যন্ত কোনওরূপ সমস্যা হবে না। ইউক্রেনে যুদ্ধের বিষয়টি এখানে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সভায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বুধবার (৯ মার্চ) মিল মালিক, পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর এবারের সংকট শক্ত হাতেই মোকাবিলা করা হবে বলে জানায় ভোক্তা অধিদফতর।
Leave a Reply