ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় দুই শিশুকে নাপা সিরাপে নয়, বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে এবং খাওয়ানো বিষয় সরবরাহ করে তাদের মায়ের প্রেমিক সফিউল্লাহ। মিষ্টিতে বিষ আগেই মেশানো ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বেলা ২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, শিশুদের বাবা ইসমাঈল হোসেন শারীরিক প্রতিবন্ধী। এনিয়েই সে সিলেটে ইটভাটায় কাজ করতেন। সেখানে সে শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকায় শুধু স্লিপ বিতরণ করেন। প্রায় ১২ বছর আগে বিয়ে করেন রিমাকে বিয়ে করেন সুজন। তাদের সংসারে তিন সন্তান রয়েছে। সংসারের অসচ্ছলতার কারণে চাতাল কলে কাজ শুরু করেন রিমা। সেখানে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে সর্দার সফিউল্লাহ’র সাথে। সফিউল্লাহ শর্ত দেয় রিমাকে দুই সন্তান সরিয়ে ফেললে বিয়ে করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সফিউল্লাহ ঘটনার দিন বিকেলে রিমাকে ৫পিছ মিষ্টি দিয়ে আসে এবং বলেন এই মিষ্টি দুই শিশুকে খাওয়ানোর পর আর কিছু করতে হবে না। রিমা দুই শিশুকে মিষ্টি খাওয়ায়৷ এদিন রিমার সাথে সফিউল্লাহ’র প্রায় ১৫ বার মোবাইলে কথা হয়৷ শিশু দুইজনের শরীরে জ্বর ছিলো। তাই রিমা নাপা খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা সাজাতে তার শাশুড়ীকে দিয়ে ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ আনিয়ে দুই শিশুকে এক চামচ করে খাওয়ায়। এরপর শিশুদেরকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসার পর মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন, সরাইল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহমেদ ও আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ রহমান প্রমুখ।
এর আগে গত ১০ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের দুই ছেলে ইয়াছিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ মারা যায় বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
Leave a Reply